May 25, 2025, 8:14 pm
রাজশাহী থেকে মোঃ হায়দার আলীঃ রাজশাহী টিচার্স ট্রেনিং কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ শওকত আলী খানের শেষ কর্মদিবস ছিল আজ। ১৪ বিসিএস কর্মকর্তা শওকত একজন পরিপাটি মানুষ। শৃঙ্খলাবোধ ও পরিমিত আচরণের কারণে সহকর্মীদের মধ্যে তার ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে।
ফরিদপুরের মানুষ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেছেন। প্রথম পোস্টিংয়ের সময় অনীহা নিয়ে রাজশাহী এসেছিলেন। তারপর কালক্রমে এখানেই স্থায়ী হয়ে গেছেন। একটি কর্মক্ষেত্রেই কেরিয়ার সমাপ্ত করলেন। দীর্ঘ এক যুগ এই ক্যাম্পাসে থেকেছেন। প্রতিষ্ঠানের প্রত্যেক কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষার্থী, প্রতিটি ঘটনার সাথে তার নিবিড় সংযোগ রয়েছে। ২০০৫ সালের দিকে যখন আমাদের সার্ভিসের অ্যাসোসিয়েশন বিপর্যয়ের মুখে তখন সংগঠনকে রক্ষা করতে রাজশাহী টিচার্স ট্রেনিং কলেজের সহকর্মীরাই এগিয়ে এসেছিলেন। সেই প্রক্রিয়ায় শওকত একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। সাধারণ কলেজ ও টিচার্স ট্রেনিং কলেজের সহকর্মীদের মধ্যে কিছু কিছু ইস্যু নিয়ে মতদ্বৈততা ছিল।
একটি মহল চায় শিক্ষা ক্যাডারে বিভক্তি সৃষ্টি করে শাসন করতে। এই সব বিরোধকে প্রশমিত করে সংগঠনকে একটি লক্ষে পরিচালিত করতে
অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে সবাই সচেষ্ট ছিলেন। বৃহত্তর এই দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি প্রফেসর শওকত আলী খানের সমর্থন সর্বদা দিয়েছেন।
প্রশাসক ও নেতা হিসেবে তিনি অত্যন্ত ভারসাম্যপূর্ণ মানুষ। টিচার্স ট্রেনিং কলেজের বিভিন্ন প্রকারের শিক্ষক ও কর্মচারীদের মধ্যে তিনি নায্যতার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। প্রতিষ্ঠানের প্রতি ছিল তার ভীষণ দরদ। এর জন্য অনেক সময় ব্যয় করেছেন। পরিবার ও অন্যান্য ক্ষেত্রেও তিনি অত্যন্ত দায়িত্বশীল। অবসর জীবনে আমি তাঁর সর্বাঙ্গীন মঙ্গল কামনা করি।
তবে কয়েকজন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান, সহকারি শিক্ষক যারা এ প্রতিষ্ঠান থেকে বিএড কোর্স করেছেন তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রথম দিকে তিনি ক্লাসে শিক্ষা প্রশাসন, মাঝে মধ্যে ইংলিশ বিষয়ে পাঠদান করাতেন। খুব কড়াকড়ি করতেন, আচারণ খুব খারাপ করতেন। তিনি হোস্টেল সুপারের দায়িত্বও পালন করেছেন বছরের পর বছর ধরে। নিন্মমানের খাবার সরবরাহ করা হলেও উনার সামনে কথা বলা যেত না। পরীক্ষায় কম নাম্বার দিতেন। খুব খারাপ আচারণ করতেন। এধরনের অনেক অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। পাঠটীকা স্বাক্ষর করতে অনেক ঝামেলা, এককই পাঠটীকায় স্বাক্ষর না করে নতুন করে লিখতে বলেছিলেন। কিন্তু না লিখে অন্য আর একজন শিক্ষার্থীর মাধ্যমে ওই পাঠটীকা নিয়ে গিয়ে স্বাক্ষর করে দেয়ার নজীরবিহীন ঘটনাও ঘটেছে। শিক্ষক নীতিপরিপন্থি কাজ করেছন, স্বজনপ্রতিও করতেন।
প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করার সময় আচারণের অনেক পরিবর্তন ঘটেছিল।
মোঃ হায়দার আলী
নিজস্ব প্রতিবেদক,
রাজশাহী।